আজকের শীর্ষ সংবাদ

রোজাদারকে ইফতার করানো কতোটুকু সওয়াবের

Spread the love

মুমিনের জন্য রমজান মাস বছরের শ্রেষ্ঠ সময়। এই মাসে নেক আমলের সওয়াব আল্লাহ তাআলা অনেক গুণ বেশি বাড়িয়ে দেন। রমজানের সবচেয়ে বড় এবং উত্তম আমল বলে গন্য করা হয় রোজাদারকে ইফতার করানোকে। পবিত্র এই মাসে আল্লাহর বান্দারা পারস্পরিক উত্তম আমলের প্রতিযোগিতা করেন। কে কার থেকে বেশি ইবাদত বন্দেগী করতে পারেন, কিন্তু আমাদের সজাগ দৃষ্টি থাকা চাই, যে আমার ইবাদতটি লোক দেখানো হচ্ছে কিনা। 

রোজাদারকে ইফতার করানোর নিয়ে যায়েদ ইবনে খালেদ জুহানি (রা) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন-

مَنْ قَطْرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لَا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرٍ الصَّائِمِ شَيْئًا

যে রোযাদারকে ইফতার করাল, তার রোযাদারের ন্যায় সাওয়াব হবে, তবে রোযাদারের নেকি বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। (তিরমিযী: ৮০৭, ইবনে মাজাহ:১৭৪৬, নাসায়ি ফিল কুবরা: ৩৩৩০-৩৩৩১, সহীহ ইবনে খুযাইমাহ : ২০৬৪, ইবনেহিব্বান: ৩৪২৯, নাসায়ি আয়েশা থেকে মওকুফ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন, (দেখুন: নাসায়ি ফিল কুবরা : ৩৩৩২, আব্দুর রায্যাক আবু হুরায়রা থেকে মওকুফ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যায়েদ ইবনে খালেদ আল-জুহানি (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করাবে সে রোজাদারের সম পরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।”[সুনানে তিরমিযি (৮০৭), সুনানে ইবনে মাজাহ (১৭৪৬), ইবনে হিব্বান তাঁর সহিহ গ্রন্থ (৮/২১৬) এ এবং আলবানি তাঁর ‘সহিহ আল-জামে’ গ্রন্থ (৬৪১৫) হাদিসটিকে ‘সহিহ’ বলেছেন।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন: “রোজাদারকে ইফতার করানো দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- তাকে পেট ভরে তৃপ্ত করানো।[আল ইখতিয়ারাত, পৃষ্ঠা-১৯]

সলফে সালেহিন খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অগ্রণী ছিলেন এবং তাঁরা এটাকে মহান ইবাদত মনে করতেন।

জনৈক সলফে সালেহিন বলেছেন: “দশজন সাথীকে দাওয়াত দিয়ে তাদের পছন্দসই খাবার খাওয়ানো আমার কাছে দশজন গোলাম আজাদ করার চেয়ে প্রিয়।

সলফে সালেহিনের অনেকে নিজের ইফতার অন্যকে খাওয়াতেন। এদের মধ্যে রয়েছেন- ইবনে উমর, দাউদ আল-তাঈ, মালিক বিন দিনার, আহমাদ ইবনে হাম্বল। ইবনে উমর এতিম ও মিসকীনদের সঙ্গে না নিয়ে ইফতার করতেন না।

সলফে সালেহিনদের কেউ কেউ তাঁর নিজের ইফতার তার সঙ্গী সাথীদেরকে খাওয়াতেন এবং নিজে তাদের খেদমত করতেন। এদের মধ্যে অন্যতম- ইবনুল মুবারক।

আবু সাওয়ার আল-আদাওয়ি বলেন:

বনি আদি গোত্রের লোকেরা এই মসজিদে নামায পড়ত। তাদের কেউ কখনো একাকী ইফতার করেনি। যদি তার সাথে ইফতার করার জন্য কাউকে সাথে পেত তাহলে তাকে নিয়ে ইফতার করত। আর যদি কাউকে না পেত তাহলে নিজের খাবার মসজিদে নিয়ে এসে মানুষের সাথে খেত এবং মানুষকেও খেতে দিত।

খাবার খাওয়ানোর ইবাদতের মাধ্যমে আরও অনেকগুলো ইবাদত পালিত হয়।

আমন্ত্রিত ভাইদের সাথে হৃদ্যতা ও ভালবাসা। যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা জান্নাতে প্রবেশের কারণ হবে। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা ঈমান আনা ছাড়া জান্নাত যেতে পারবে না। আর পারস্পারিক ভালোবাসা ছাড়া তোমাদের ঈমান পরিপূর্ণ হবে না।”[সহিহ মুসলিম (৫৪)]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *