আজকের শীর্ষ সংবাদ

ফ্লাইট ভাড়া দ্বিগুণ,ওমরাহ টিকিট সংকট 

Spread the love

অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান অপরিসীম সওয়াব ও দোয়া কবুলের আশায় পবিত্র রমজান মাসে ওমরাহ করতে মক্কা-মদিনায় যেতে চান। ফলে সৌদি আরবে বিমানের টিকিটের চাহিদা বেড়ে যায়। এ সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে একটি বেপরোয়া সিন্ডিকেট। তারা ওমরাহ তীর্থযাত্রীদের জিম্মি করে নিজেদের ইচ্ছামতো টিকিট কেনাবেচা করে পকেট ভর্তি করার সুযোগ নেয়।

রমজানকে সামনে রেখে ওমরাহ টিকিটের দাম এখন আকাশচুম্বী। চড়া দামে ওমরাহ টিকিট কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন যাত্রীরা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সিস্টেমে কোনো ওমরাহ টিকিট পাওয়া যায় না। বিমান ওমরাহ টিকিট আটকানোর জন্য অসাধু ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগসাজশ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 ওমরাহ টিকিটের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। দালালদের চড়া দাম দিয়েই টিকিট পাওয়া যায়। এছাড়া পুরো রমজান মাসে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের সব রুটে বিমানের ভাড়া দেড় থেকে দুই গুণ বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ছাড়াও তৃতীয় ক্যারিয়ারের ওমরাহ টিকেটের দাম হঠাৎ করে বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বিমানের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রমজান মাস এলে ওমরাহ যাত্রীদের ওপর অনেক চাপ থাকে। আর এই সুযোগে বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স তাদের বেসিক ইকোনমি ক্লাসের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দিচ্ছে এবং অতিরিক্ত দামে ইকোনমি ফ্লেক্সি ও ইকোনমি প্রিমিয়াম ক্লাসের দাম নিচ্ছে। এটা প্রতি বছর হয়। কিন্তু নজরদারির অভাবে এই সিন্ডিকেট ভাঙা যাচ্ছে না।

 রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওমরাহযাত্রীদের গন্তব্য সাধারণত সৌদি আরবের জেদ্দা বা মদিনা। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে এই দুটি রুটে শুধুমাত্র বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদি এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে। 

এই রুটে বিমান ভাড়া স্বাভাবিক সময়ে ৭০,০০০ থেকে ৭৫,০০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। সৌদিতেও একই ভাড়া। কিন্তু এখন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জেদ্দা রুটে ভাড়া ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা এবং মদিনা রুটে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। সৌদি এয়ারলাইন্স জেদ্দা ও মদিনা রুটে ভাড়া নিচ্ছে ১ লাখ ২২ হাজার টাকা। অর্থাৎ বিমান ও সৌদিয়ার টিকিট প্রতি টিকিট ৪০-৪৫ হাজার টাকা বেশি নিচ্ছে। বিমান বাংলাদেশ এবং সৌদিয়া ছাড়াও তথাকথিত তৃতীয় বাহক এয়ার এরাবিয়া, এমিরেটস এয়ারলাইন্স, ফ্লাই দুবাই, গালফ এয়ার, জাজিরা এয়ারওয়েজ, কুয়েত এয়ারওয়েজ, কাতার এয়ারওয়েজ, এয়ার ইন্ডিয়া, ভিস্তারা এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ার এবং সালাম এয়ার বাংলাদেশ থেকে যাত্রী নিয়ে যায়। 

সৌদি আরব ট্রানজিট তাদের নিজ দেশ. ওমরাহ যাত্রীদের আরবে পৌঁছে দেয়। দীর্ঘ ট্রানজিট এবং যাত্রার সময়ের কারণে এসব ফ্লাইটের ভাড়া তুলনামূলকভাবে কম ছিল। তবে রমজান মাস ঘিরে তারা ফ্লাইট ভাড়াও দেড় থেকে দুই গুণ বাড়িয়েছে। হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সাবেক নেতা রুহুল আমিন মিন্টু বলেন, তৃতীয় বাহকদের ৬০ হাজার টাকার ওমরাহ টিকিট এখন ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এয়ার এরাবিয়া এয়ারলাইন্স, এমিরেটস এয়ারলাইন্স, ফ্লাই দুবাই, গালফ এয়ার, জাজিরা এয়ারওয়েজ, কুয়েত এয়ারওয়েজ, কাতার এয়ারওয়েজ, এয়ার ইন্ডিয়া, ভিস্তারা এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ার এবং সালাম এয়ার বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ যাত্রীদের বহন করে। এয়ার ইন্ডিয়া এবং ভিস্তারা এয়ারলাইন্স সাধারণ সময়ে 60,000 থেকে 65,000 টাকায় যাত্রী বহন করত। 

রমজানের সময়, এয়ার ইন্ডিয়া ভারতে ট্রানজিটের জন্য 90,000 টাকা চার্জ করে, আর ভিস্তারা এয়ারলাইনস 97,000 টাকা নেয়। একইভাবে ওমান ও সালাম এয়ার ৬৫ হাজার টাকা থেকে ৯৬ হাজার টাকা নিচ্ছে। এমিরেটস এয়ারলাইন্স ভাড়া নিচ্ছে ১ লাখ ৬ হাজার টাকা এবং গালফ এয়ার ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা।

এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল ড. মফিদুর রহমান বলেন, এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক ফ্লাইট দেখার অধিকার আমাদের নেই। চাহিদা বাড়ে এবং ক্ষমতা কম হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দাম বাড়ায়।

এদিকে, একাধিক ওমরাহ এজেন্সির মালিকরা অভিযোগ করে বলছেন, বাংলাদেশ বিমানের স্থানীয় সেলস অফিসের চিহ্নিত কর্মকর্তা নিখোঁজ টিকিট গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। টিকিটের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন তারা।

আরো পড়ুন>>গুলি-মর্টার শেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙল টেকনাফ সীমান্তের মানুষের

2 thoughts on “ফ্লাইট ভাড়া দ্বিগুণ,ওমরাহ টিকিট সংকট 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *