আজকের শীর্ষ সংবাদ

সম্ভ্রম রক্ষা

Spread the love
সম্ভ্রম রক্ষা
সম্ভ্রম রক্ষা

নবীয়ে আকরাম বেত্রা-এর মজলিসে লোকজন বসা। হঠাৎ দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল। তখন রাসূলে পাক এরা বললেন, কেউ বায়ু নির্গত করে থাকলে অজু করে আসো। বায়ু নির্গতকারী ব্যক্তি লজ্জার কারণে দাঁড়ায়নি। নবীজি এরা আবার বললেন, আল্লাহ তাআলা সত্য-প্রকাশে লজ্জা পান না। তাই যার অজু ভঙ্গ হয়েছে সে ওঠে গিয়ে অজু করে আসুক। তখন হযরত আব্বাস রাযি, বললেন, হে আল্লাহর রাসুল। আমরা সবাই ওঠে গিয়ে অজু করে আসি। (এভাবে অজু ভঙ্গ হওয়া ব্যক্তি লজ্জা পাওয়া থেকে বেঁচে যাবে)।

– মুমিনউ কি যেহানাত কে কিসে। ৫৪।

আল্লাহর রাহে জান-কুরবানের আফসোস

হযরত ওমর রাযি, সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বিন হুযাফা সুলামী রাযি.-কে দশ-সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতা করে খ্রিস্টান বাদশাহর কাছে পাঠান। প্রতিনিধিদের কয়েদ করা অন্যায় হলেও বাদশাহ। ওদেরকে বন্দী করে ফেলেন। বন্দী অবস্থায় কিছুদিন থাকার পর বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন হুযাফাকে প্রস্তাব দেন, তুমি খ্রিস্টানধর্ম গ্রহণ করে নাও, তোমাকে অর্ধেক সাম্রাজ্য দিয়ে দেব। সাহাবী বললেন, তোমার সাম্রাজ্যের মূল্য কতটুকু যার খাতিরে ইসলামধর্ম ত্যাগ করতে পারি? আল্লাহ হেফাজত করুন। বাদশাহ বলেন, আমাকে একবার সেজদাহ করে নাও, অর্ধেক রাজত্ব দিয়ে দেব। তিনি জবাব দেন, এই মাথা কেবল আল্লাহর সামনে নত হয়, আর কারো সামনে নয়।

বাদশাহ বিরাট অগ্নিকুণ্ড তৈরি করে তার ওপর বড় কড়াইয়ে পানি গরম করান। তার আদেশে একজন জীবন্ত কয়েদিকে সেই পানিতে ফেলা হয়। পানিতে পড়ামাত্র তার হাড়-গোড় ছিন্নবিন্ন হয়ে যায়, তড়পাতে তড়পাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এটা দেখিয়ে বাদশাহ সাহাবীকে বললেন, যদি আমাকে সেজদাহ না কর তা হলে এভাবে গরম পানিতে ফেলে তোমাকে ছারখার করে দেব। তিনি জবাব দিলেন, আপনার যা মর্জি করুন আমি কিছুতেই সেজদাহ করব না। বাদশাহ তার লোকদের বললেন, ওকে নিয়ে যাও, উত্তপ্ত পানিতে ফেলে খতম করে দাও।

সিপাহীরা তাকে নিয়ে চলল, রাস্তায় তিনি কাঁদা শুরু করলেন। সিপাহীরা বাদশাহর কাছে সংবাদ পাঠালো যে, কয়েদি কাঁদছে। বাদশাহ বললেন, তাকে নিয়ে আস। নিয়ে আসার পর বাদশাহ জিজ্ঞেস করলেন, সেজদাহ করতে কি সম্মত হয়েছো, মাথা কি ঠাণ্ডা হয়েছে? তিনি বললেন, মোটেই নয়। বাদশাহ বললেন, স্ত্রী-সন্তানের কথা স্মরণ করে কি কাঁদছিলে? না মৃত্যুর ভয়ে কেঁদেছ? আব্দুল্লাহ বিন হুযাফা বললেন, এসব কোন কারণেই কাঁদছি না। তবে কেন কাঁদছিলে? বাদশাহর প্রশ্ন। তখন সাহাবী আসল কথা বললেন, দ্বীন-ইসলামের খাতিরে জান দেওয়ার যে সৌভাগ্য লাভ করছি, আফসোস আমার কাছে তো একটি প্রাণ রয়েছে, যদি হাজারখানেক প্রাণ থাকতো তবে সব বিলিয়ে দিতে পারতাম। এটা ভেবেই কাঁদছি।

বাদশাহ নমনীয় হয়ে প্রস্তাব দিলেন, যদি আমার ললাটে চুমু দিয়ে দাও তবে তোমাকে ছেড়ে দেব। আব্দুল্লাহ বিন হুযাফা রাযি. জিজ্ঞেস করেন, আমাকে একা ছাড়বে না সঙ্গীদেরও? বাদশাহ বললেন, সকলকে ছেড়ে দেব। সাহাবী বাদশাহর ললাটে চুমু দিয়ে আপন সঙ্গীদের মুক্ত করে নিয়ে আসলেন। ফিরে এসে আমীরুল-মুমিনীন হযরত ওমর রাযি.-কে সারা ঘটনা জানালেন। হযরত ওমর রাযি, খুশি হয়ে হযরত আব্দুল্লাহ বিন হুযাফা রাযি.-এর ললাটে চুমু খেলেন।

-মাওয়ায়েযে ফকীহুল উম্মাত। ৪/১০২।

কবরের ফেরেস্তাকে ভয় পাব কেন?

নবীয়ে আকরাম হযরত ওমর রাযি.-কে জিজ্ঞেস করলেন, যখন কবরে তুমি একা থাকবে এবং ভয়াবহ ধরনের দুইজন ফেরেশতা এসে তোমাকে প্রশ্ন করবেন তখন তোমার কি দশা হবে। জবাবে হযরত ওমর রাযি, জিজ্ঞেস করলেন, ও সময় কি আমার জান- বুদ্ধি থাকবে? নবীজি বললেন, হ্যাঁ, জ্ঞান-বুদ্ধি থাকবে বরং আরো বৃদ্ধি পাবে। তখন হযরত ওমর বললেন, জ্ঞান-বুদ্ধি যদি থাকে তবে ভয়ের কিছু নেই। ইনশা-আল্লাহ সবকিছু ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হবে।

আদর্শ জীবনের গল্প ২৫

-আমছালে ইবরাত: ১৬।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *