ফিতরা কি
ফিতরা হলো আরবি শব্দ এটি ইসলামে যাকাতুল ফিতর (ফিতরের যাকাত) বা সাদাকাতুল ফিতর নামে পরিচিত। ফিতর বা ফেতর বলতে সকালের খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হয় যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভঙ্গ করে থাকেন। সদকাতুল ফিতর বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থ অসহায় মানুষের মাঝে রোজাদারগনের বিতরণ করা দানকে।
ফিতরা দেওয়ার বিধান
সাদকাতুল ফিতর বা ফিতরা সকল মুসলিম নর-নারী ছোট বড় সকলের উপর দেওয়া আবশ্যক। এই সম্পর্কে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে,
হযরত ওমর (রা) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেন, আমার উম্মতের মধ্যে ক্রীতদাস, স্বাধীন নর-নারী এবং পুরুষ-মহিলা ছোট এবং বড় সকলের উপর মাথা পিছু এক ছা পরিমাণ খেজুর অথবা যব সতকাতুল ফিতর (ফিতরা) হিসেবে ওয়াজিব করা হয়েছে এবং তা যেন ঈদগাহে যাওয়ার আগেই আদায় করে ফেলা হয়। (সহিহ বুখারী, মুসলিম, আহমদ)
যদি কোন ব্যক্তি ঈদের দিন সুবহে সাদিকের পূর্বে মারা যায় তাহলে তার উপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়। আবার সুবহে সাদিকের ফরে যদি কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে তার উপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজ হবে। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি)
ফিতরা কত টাকা ২০২৪ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
প্রত্যেক বছরের ন্যায় এই বছরও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে ফিতরাতুল যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে যা সর্বোচ্চ ২৯৭০ টাকা, এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন যেভাবে ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ করেছেন।
পণ্যের নাম | পরিমাণ কজি | মূল্য তালিকা |
যব | ৩,৩ কেজি | ৪০০ টাকা |
খেজুর | ৩,৩ কেজি | ২৪৭৫ টাকা |
পনির | ৩,৩ কেজি | ২৯৭০ টাকা |
কিসমিস | ৩,৩ কেজি | ২১৪৫ টাকা |
গম/ আটা | ১,৬৫ কেজি | ১১৫ টাকা |
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে দেশের সব জায়গায় থেকে সংগৃহীত যব আটা খেজুর কিসমিস এবং পনিরের বাজার দামের ভিত্তিতে এই সদকাতুল ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে যে কেউ চাইলে নিজ নিজ অবস্থান অনুযায়ী এই পণ্যগুলোর মধ্য থেকে যেকোনো একটি পণ্য এর বাজার দামের উপর ভিত্তি করে জাকাতুল ফিতরা বা ফিতরা হিসেবে আদায় করতে পারবে।
ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে
ফিতরা পাওয়ার অধিকতর হকদার হল ফকির, এতিম, মিসকিন, নিঃস্ব, অসহায় দরিদ্র এই প্রকারের ব্যক্তিগণ।
ফিতরা কার উপর ওয়াজিব
ফিতরা সকল মুসলিম নর-নারী ছোট বড় প্রত্যেকের উপর মাথাপিছু করে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। তবে যদি কোন ব্যক্তি ঈদের দিন সুবহে সাদিকের পূর্বে মারা যায় তাহলে তার উপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়।
ফিতরা দেয়ার নিয়ম
টাকা দিয়ে ফিতরা দেওয়া। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত ছিল দিরহাম। দিরহাম দ্বারা বেচা-কেনা করা হতো এবং দান খয়রাতোও। এরপরেও হযরত সাঈদ খুদুরী (রা) হতে বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায় যে, রাসূলে কারীম (সাঃ) খাদ্য বস্তু দ্বারাও ফিতরা আদায় করতেন। তাই এই ব্যাপারে মুসলিম স্ক্লারদের ভিন্ন মতামত রয়েছে তাদের সব কথা বিবেচনা করে জানা যায় যে টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করলেও আদায় হয়ে যাবে। চাইলে বস্তু দ্বারাও ফিতরা আদায় করা যাবে।