আজকের শীর্ষ সংবাদ

ঐতিহাসিক নিদর্শন তাজমহল

Spread the love

ভারতীয় মুঘল সম্রাটদের অন্যতম ছিলেন বাদশা শাহজাহান। তার প্রয়াত  স্ত্রী মমতাজের প্রতি তার ছিল সীমাহীন ভালোবাসা ও মোহাব্বত, অথচ তার স্ত্রী জীবনের সামান্য অংশ তার সাথে কাটাতে পেরেছিলেন। (অর্থাৎ তিনি অল্প বয়সে ইন্তেকাল করেন) তাই সম্রাট খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন। তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। সম্রাট তখন তার কবরের উপর এমন একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার মনস্থ করলেন, যার সামনে জাকজমকপূর্ণ গৌরবময় সু উচ্চ ইমারত সমূহ  সাধারণ মনে হয়। এই স্মৃতিসৌধ চিরকালের নিদর্শন এবং ভালোবাসার প্রতীক সান্তনার উপায় এবং বেদনা হতো অন্তরের জন্য আনন্দদায়ক হয়ে থাকবে। তাই তিনি সুদক্ষ এক হাজার কারিগর ও রাজমিস্ত্রি একত্রিত করলেন। তারা অনবরত ২২ বছর কাজে নিয়োজিত ছিলেন।সম্রাট এ স্মৃতিসুধ নির্মাণে যে  অর্থ ব্যয় করেছিলেন তার পরিমাণ ছিল 30 মিলিয়ন রুপির অধিক। 

 

সম্রাট প্রতিষ্ঠা করলেন সুন্দর  জানালার  মত চমৎকার আকৃতি বিশিষ্ট  সুউচ্চ ভবনের এক স্মৃতিসৌধ।  তার গেইট তৈরি করা হয়েছে সেই লাল পাথর দ্বারা যা সাদাকালো মার্বেল পাথর দ্বারা সুসজ্জিত করা হয়েছে। তার মাঝখানে হারের একটি তাক রয়েছে, যা তার সৌন্দর্য ও উজ্জ্বল্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। অভ্যন্তরে রয়েছে তার সুউচ্চ ভবনের প্রাচীরের সুপ্রসস্থ একটি বাগান, যাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে রকমারি ফুল আর সুগন্ধি বৃক্ষ। তার উজ্জ্বল রং দ্বারা তাদের ডালপালা পরস্পর আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে মিলেমিশে আছে। 

 

তা রাস্তার উভয় পাশে দু সারিতে ফুল গাছগুলো সাজানো রয়েছে। তার সামনেই রয়েছে ফোয়ারা সমূহ, যেগুলো তার আশপাশে স্প্রের মাধ্যমে পানি ছিটাচ্ছে। তার সামনেই রয়েছে ভিতরের প্রাচীর।  তাতেই এমন ফুল দ্বারা চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে যা উজ্জ্বল মর্ম পাথরের অঙ্কিত।

 

 ভিতরের এই দেয়ালের উপরিভাগ মার্বেল পাথর দ্বারা সজ্জিত, যেখানে উঠে গেছে মর্মর পাথরের সিঁড়ি। উভয় পাশে রয়েছে সাদা ও কালো পাথরের অলঙ্কৃত লাল পাথর দ্বারা নির্মিত আলিশান দুটি মসজিদ।  প্রতিটি মসজিদে মরমর পাথরের তিনটি গম্বুজ রয়েছে। তবে একটি মসজিদ  অব্যবহিত। কেননা সেটি কিবলামুখী নয়। এ মসজিদটিকে অপর মসজিদের সদৃশ্য রক্ষার জন্য বানানো হয়েছে।

 

 এই দেয়ালের উপরিভাগে মাঝখানে রয়েছে দ্বিতীয় চত্বর, যা তার থেকেও উঁচু যার চার  কোণে রয়েছে চারটি মিনার। এই চত্বরের মাঝখানে রয়েছে সুউচ্চ ও প্রশস্ত একটি গম্বুজ, যাকে ছোট আরও চারটি গম্বুজ ঘিরে রয়েছে। 

তার গেট হল নকশাকৃত উঁচু একটি তাক। আর গম্বুজের ভূ-ভাগ হলো মোজাইকের,  যা দুর্লভ আকৃতিতে নকশাকৃত। আর তার দেওয়ালে খাঁটি সোনার দ্বারা লিপিবদ্ধ পবিত্র কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াত রয়েছে। গম্বুজের মাঝখানে রয়েছে একটি খাস কামরা, যেখানে আছে  কফিন।

 

 বিস্ময়কর এ আকৃতি নিয়েই সদা সর্বদা এ স্থাপিত্যটি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কে তাক লাগিয়ে চলছে। এবং স্থাপিত্য শিল্পের অনন্য নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তথাপি স্মৃতি বহনকারী এরূপ কাজে প্রচুর অর্থ ব্যয় করাকে ইসলাম বৈধ মনে করে না। বরং ফকির মিসকিনদের উপর খরচ করা উচিত কারণ তারাই বেশি  হকদার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *