একটি বারোমাসি ভাল জাতের কাঁঠালের বৈশিষ্ট্য গুণাবলী নীচে বর্ণনা করা হলো
**ডং রাসিমি কাঁঠাল চারা রোপণের মাত্র ছয় মাস থেকে এক বছরেই পাওয়া যাবে ফল। বছরের বারমাসই ধরবে কাঁঠাল। থাকবে না আঠাও। দেশে কাঁঠালের বর্তমান যেসব জাত আছে, সেগুলোর বীজ রোপণের ৭-৮ বছর পর ফল ধরা শুরু হয় উচ্চফলনশীল নতুন কাঁঠাল জাতটির নাম ডং রাসিমি চারা রোপণের ১ থেকে ৬ মাসেই ফলন হয়ে থাকে।
জাতীয় ফল হলেও কাঁঠাল চাষ প্রসারে এতদিন অন্যতম বড় বাঁধা ছিল ‘উন্নত চারা’। কারণ প্রাচীনকাল থেকে কাঁঠালের চাষ হয়ে আসছে প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজ থেকে তৈরি চারা দিয়ে। এ পদ্ধতিতে চারা লাগানোর পর গাছে ফলন আসে ৭-৮ বছর পর। তাছাড়া প্রচলিত পদ্ধতিতে জাত, স্বাদ, মিষ্টতা ও ঘ্রাণ কখনও ঠিক থাকে না। এ সমস্যা সমাধানে ডং রাসিমি কাঁঠালের কলম ও উচ্চ ফলনশীল নতুন জাত অল্প সময়ে ফল আসার কারণে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বাণিজ্যিকভাবে এই জাতের কাঁঠাল বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকেই। বারোমাসি ও আঠাবিহীন এই কাঁঠাল চাষ করে সারাবছর এই ফলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এটি ছাদ বাগানে অনেক ভালো ফলন হচ্ছে ১৮ ইঞ্চি টপ থেকে শুরু করে হাফ ড্রাম এ লাগালে অনেক ভালো ফলন আসবে.
কাঁঠাল খাওয়ার ১২ উপকারিতা
গোঁফে তেল দিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ। গ্রীষ্মের ফল কাঁঠাল পাকতে শুরু করেছে। সুমিষ্ট এই ফলটি পুষ্টিগুণে ঠাসা। এক কাপ কাঁঠালে মেলে ১৫৭ ক্যালোরি, ৩৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ গ্রাম ফ্যাট, ৩ গ্রাম ফাইবার এবং ৩ গ্রাম প্রোটিন। এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, কপার ও ম্যাংগানিজেরও উৎস কাঁঠাল। কাঁঠালের মৌসুমে নিয়মিত ফলটি খেলে পাওয়া যাবে অনেক উপকার।
১। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে কাঁঠালে। এই ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
২। ফাইবারের ভালো একটি উৎস কাঁঠাল। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয় নিয়মিত কাঁঠাল খেলে।
৩। আলসারের সমস্যা প্রাকৃতিক উপায়ে কমাতে সাহায্য করে কাঁঠালে থাকা এক ধরনের উপকারী উপাদান।
৪। বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৫। কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
৬। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি মেলে কাঁঠাল থেকে। নিয়মিত ফলটি খেলে তাই ত্বক ভালো থাকে ও ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখা যায়।
৭। অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে কাঁঠাল খেলে। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকা যায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮। বেশ কয়েক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস কাঁঠাল। এসব উপাদান হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৯। ক্যানসারের ঝুঁকি কমে কাঁঠাল খেলে। কারণ কাঁঠালে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহকে ক্ষতিকর ফ্রির্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে।
১০ । শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে কাঁঠালে থাকা ভিটামিন সি।
১১। কাঁঠালে থাকা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি হাড় শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে।
১২। আয়রন মেলে ফলটি থেকে। এই খনিজ উপাদান রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে
***কাঁচা কাঁঠাল খেলে যেসব রোগ কাছে আসবে না
পাকা কাঁঠালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে প্রায় সবারই জানা, কিন্তু কাঁচা কাঁঠালের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কাঁচা কাঁঠালে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ, যার অন্য নাম ডায়াটারি ফাইবার। আঁশজাতীয় খাবার দীর্ঘ সময় পেট ভরে রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো প্রায় প্রাত্যহিক রোগ দূর করে। এ ছাড়া কাঁঠালের আঁশ কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
শরীরের জন্য কাঁচা কাঁঠাল খুবই উপকারী। কাঁঠালে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, বি-১, বি-২, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান। ভিটামিন ‘সি’ আমাদের রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে দ্বিগুণ শক্তিশালী করে। তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ত্বক, নখ, চুল, দাঁতের পুষ্টি জোগায়। চর্মরোগ প্রতিরোধে কাজ করে।
পাকা কাঁঠালে চিনির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি থাকে। পাকা-মিষ্টি কাঁঠাল ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও ক্ষতিকর। কিন্তু কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খাওয়া যায়, যা রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায় না।
আসুন জেনে নিই কাঁচা কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতা-
১। উচ্চমানের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসমৃদ্ধ ফল কাঁঠাল। এতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে ওঠে।
২। এতে থাকা সোডিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখে, যা উচ্চ-রক্তচাপ ও হার্টও ভালো রাখে।
৩। কাঁঠাল ফাইবার সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে।
৪। কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন, যা চোখ ভালো রাখে
৫। কাঁঠালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও বলিরেখাও কমে।
৬। কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন বি৬ এবং প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরি।
৭। কাঁঠালে আয়রন থাকে, যা রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। রক্তাল্পতায় রোগীদের জন্য কাঁঠাল খুবই উপকারী।
৮। কাঁঠাল পাইলস ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৯। কাঁঠালে ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড় শক্ত রাখে।