রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে একটি ভবনে আগুনে ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর শোনা যাচ্ছে নানা ঘটনা। কেউ ভবনটির রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন পরিবারসহ, কেউ গিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ কেউ ভবনটিতে কাজ করে সংসার চালাতেন।
সবশেষে যা জানা গেল
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন ৪৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আরও জানিয়েছেন, ১২ জন চিকিৎসাধীন। তাঁরা কেউ শঙ্কামুক্ত নন। এর মধ্যে দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ১০ জন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
৪৬ জনের মধ্যে ৪০ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ৩৮ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম জানিয়েছেন, লাশ বহনের জন্য নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত ৩ জনের পরিবার এই অর্থ নিয়েছে। বাকিরা সচ্ছল হওয়ায় অর্থ নেয়নি। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য আপাতত ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) এর প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম জানান, বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে ওই ভবনের কেবল ৮ তলায় আবাসিক এর অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। বাকি এক থেকে সাত তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক অনুমোদন নেওয়া হলেও সেখানে কেবল অফিস কক্ষ ব্যবহারের জন্য অনুমোদন ছিল। কিন্তু রেস্টুরেন্ট শোরুম বা অন্য কিছু করার জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান বলেন, আগুনের ঘটনায় তদন্তে যাঁরা দায়ী হবেন, তাঁদের কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থী এক ইতালিপ্রবাসী ও তাঁর পরিবারের চার সদস্য। রয়েছেন নাজিয়া আহমেদ (৩২) নামের এক নারী ও তাঁর দুই শিশুসন্তান আরহান আহমেদ (৭) ও আবিয়াত আহমেদ (৩)।
বেঁচে ফেরাদের মধ্যে রয়েছেন স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং প্রতিষ্ঠানটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার। তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সেখানে খেতে গিয়েছিলেন। উপলক্ষটি ছিল বড় মেয়ের (১২) জন্মদিন।