আজকের শীর্ষ সংবাদ

স্বাস্থ্যের জন্য লাল শাঁকের গুরুত্ব অপরীসিম

স্বাস্থ্যের জন্য লাল শাঁকের গুরুত্ব অপরীসিম
Spread the love

অনেকে মনে করেন, রক্তশূন্যতা দূর করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় বেশি বেশি লালশাক খাওয়া। ধারণাটি ভুল নয়। তবে শুধু রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় আয়রনই নয়; এ শাকে রয়েছে আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান, যা শিশুদের শারীরিক বিকাশেও বিশেষ উপযোগী।

স্বাস্থ্যের জন্য লাল শাঁকের গুরুত্ব অপরীসিম
স্বাস্থ্যের জন্য লাল শাঁকের গুরুত্ব অপরীসিম

পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম লালশাকের মধ্যে ৮৮ গ্রামই জলীয় অংশ; ১ দশমিক ৬ গ্রাম খনিজ পদার্থ। এ শাকে বিদ্যমান খনিজ উপাদানের মধ্যে আয়রন বা লৌহ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, দস্তা, পটাশিয়াম, ফসফরাস উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর ক্যারোটিন; যার পরিমাণ প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ১২ হাজার মাইক্রোগ্রাম। চোখ ভালো রাখতে লালশাকের ক্যারোটিন বেশ উপকারী। শাকটিতে আরও রয়েছে ভিটামিন বি–১, ভিটামিন বি–২, ভিটামিন সি।

উপকারিতা

লালশাকে প্রচুর আয়রন রয়েছে। তাই নিয়মিত এ শাক খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয়। এ ছাড়া এ শাকের অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি রক্তে কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়। লালশাকে ক্যালরির পরিমাণ তুলনামূলক কম থাকে। মানবদেহের দাঁত ও অস্থি গঠনে, দাঁতের মাড়ির সুস্থতা রক্ষায় এবং মস্তিষ্কের বিকাশে লালশাকের কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। এ শাকের আঁশ বা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটা বাড়তি ওজন কমাতেও সহায়ক।

রঙিন হওয়ার কারণে শিশুরাও লালশাক খেতে পছন্দ করে। বাজার থেকে লালশাক এনে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর অল্প তাপে সামান্য তেলে রান্না করলে এ শাকের পুষ্টিগুণ বজায় থাকে বেশি। পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা বিবেচনা করে নিত্যদিনের পাতে লালশাক রাখার চেষ্টা করুন।

এই শাক খেলেই কমবে ওজন, বাড়বে দৃষ্টিশক্তিও 

শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে শাক-সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ শাক-সবজিতে রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণ। তেমনই একটি শাক হল লালশাক। সাধারণ ভাবে … 

রক্তশূণ্যতা

অনেকেই অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা বা রক্তশূন্যতায় ভোগেন। কারণ আয়রনের ঘাটতি। সে ক্ষেত্রে লালশাক খেলে শরীরে রক্ত তৈরি হয়। কারণ এতে আছে প্র… 

লালশাকে রয়েছে প্রচুর আয়রন। লালশাক শরীরে লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়ায়। তাই অ্যানিমিয়া রোগী এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য এ শাক খুবই উপকারী। নিয়মিত লালশাক খাওয়া হলে কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান শরীর থেকে বের হয়ে যায়।

কেন খাবেন লালশাক

শীতে লাল শাক বেশি পাওয়া যায়। লাল শাকের পুষ্টিগুণ অতুলনীয়। ১০০ গ্রাম লাল শাকে রয়েছে ১০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম ডায়াটারি ফাইবার, ৪. ৬ গ্রাম প্রোটিন, ৪২ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৩৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১১ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৩৬৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ মিলিগ্রাম আয়রন, ১. ৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন-এ এবং ৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি। আর এই সবকটি উপাদান শরীরের গঠনে ভীষণ ভাবে কাজে লাগে। বিশেষত ক্যানসারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে, ওজন কমাতে, কিডনির ক্ষমতা বাড়াতে এবং আরও নানাবিধ রোগের খপ্পর থেকে শরীরকে বাঁচাতে লাল শাকের উপদানগুলো নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।

লাল শাকে উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন শরীরের অ্যাজমার প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রেসপিরেটরি সিস্টেমের উন্নতিও ঘটায়। হাড়ের নানা রোগ প্রতিকার করতে সহায়তা করে। লাল শাকে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন-কে , যা হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার হাড় শক্তপোক্ত হয়ে উঠলে অস্টিওপরোসিস-এর মতো হাড়ের রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। লাল শাকে উপস্থিত “ফাইটোস্টেরল” নামক উপাদান থাকায় একদিকে যেমন ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে, তেমনি নানাবিধ হার্টের রোগের অ্যান্টিডোট হিসেবেও কাজ করে। অ্যানিমিয়ার মতো রোগের  হিসেবে লাল শাক খুবই উপকারী। এমনকি লাল শাক শরীরে লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো অ্যানিমিয়া রোগীদের এই শাকটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

স্বাস্থ্যের জন্য লাল শাঁকের গুরুত্ব অপরীসিম
স্বাস্থ্যের জন্য লাল শাঁকের গুরুত্ব অপরীসিম

২ আঁটি লাল শাককে ব্লেন্ড করে রস সংগ্রহ করে তার সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে যদি নিয়মিত খেতে পারেন, তাহলে শরীরে কখনো হিমোগ্লোবিনের অভাব তৈরি হবে না। লাল শাকে উপস্থিত ভিটামিন সি রেটিনার ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। তাই যারা চোখে কম দেখেন বা পরিবারে গ্লুকোমার মতো রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা সময় নষ্ট না করে নিয়মিত লাল শাক খেতে পারেন। লাল শাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর হয়। ফলে রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারেকাছে ঘেঁষতে পারে না। শীতের এই সময়টাতে অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই জ্বর কমাতে ওষুধের বিকল্প হিসেবে পাত্রে পানি ফুটিয়ে তাতে একমুঠো লাল শাক ফেলে দিন। তারপর পানিটা ফোটাতে শুরু করুন। যখন দেখবেন ফুটতে ফুটতে পানির পরিমাণ অর্ধেক হয়ে গেছে, তখন পানি ঠাণ্ডা করে পান করুন। দুই দিন পান করার পর দেখবেন জ্বর চলে গেছে। লাল শাকে উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন-ই, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন-সি শরীরে উপস্থিত একাধিক টক্সিন উপাদানের ক্ষতি করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ক্যানসার সেল যাতে জন্ম নিতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়ে লাল শাক খেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *