আজকের শীর্ষ সংবাদ

যে ভাবে লাগলো বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুন

যে ভাবে লাগলো বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুন
Spread the love

রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে আগুনের শিখা ঝরে গেছে একই পরিবারের ৫ জনসহ ৪৬টি প্রাণ। শুক্রবার (১ মার্চ) রাত ১০টা পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়। এছাড়া আহত ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

যে ভাবে লাগলো বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুন
যে ভাবে লাগলো বেইলি রোডে ভয়াবহ আগুন

আগুনের সূত্রপাত যেভাবে হল

ঘড়ির কাঁটায় সময় তখন বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত প্রায় সাড়ে ৯টা থেকে ৯ টা ৪০ মিনিট। প্রতিটি ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট। সবকটি রেস্টুরেন্টই বহু মানুষ। আগুনের খবর পৌঁছাতে খুব বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও বের হতে পারেননি অনেকেই। কারণ বের হওয়ার একমাত্র পথেই লেগেছিল আগুন! নিরুপায় হয়ে ফের চলে যেতে হয় ওপরের ফ্লোরে। কিন্তু শিশু ও তরুণ-তরুণী কেউই রেহাই পায়নি আগুনের গ্রাস থেকে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনের নিচ তলা থেকেই আগুনের সূত্রপাত। আর সিঁড়িজুড়ে বড় বড় গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় আগুন দ্রুত ছড়ায়। নিচের একটি দোকান থেকে আগুন ছড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ আলম। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধদের দেখতে যাওয়ার পর তিনি এ কথা বলেন।

গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর। পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সভাপতি পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, কমিটির সদস্য সচিব ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন, সদস্য করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট জোনের ডিএডি, সিনিয়র স্টেশন অফিসার এবং ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরকে। কমিটিকে সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া ৪৬ জনের মধ্যে ৪০ জনের মরদেহ বুঝে পেয়েছেন স্বজনরা।

একই পরিবারের ৫ জনের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম

অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো একই পরিবারের ৫ জনের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে চলছে মাতম। সৈয়দ মোবারক হোসেনের, স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন আগুনে পুড়ে অঙ্গার। এক মাসের মধ্যে স্থায়ী বসবাসের জন্য ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগুনের শিখায় স্বপ্নের সঙ্গে নিজেরাও শেষ হয়ে গেলেন।

পুড়ে মারা যান ৭ বান্ধবীসহ ১২ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া ৪৬ জনের মধ্যে একজন শিক্ষক ও ১১ শিক্ষার্থী ছিলেন। জানা গেছে এতে একসঙ্গে ৭ বান্ধবীও রয়েছেন । তারা রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের ছাত্রী। তবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।

এছাড়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী নাহিয়ান আমিন ও লামিশা ইসলাম। নাহিয়ান আমিন বিশ্ববিদ্যালয়টির ইইই বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী। আর লামিসা ইসলাম একই ব্যাচের মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

একইসঙ্গে এই ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা লুৎফুর নাহার করিম (৪৭) ও তার মেয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জান্নাতি তাজরিন (২৩) প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া আগুনে পুড়ে মারা গেছেন তুষার হাওলাদার নামে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিকতা বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

চুমুক রেস্টুরেন্টের দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ উদ্দিন ব্রিফিংয়ে এই তথ্য mbangla.com কে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *